Rajat Bose | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১ : ৩২Rajat Bose
মিল্টন সেন, হুগলি: সামান্য তর্ক বিতর্ক। পরিণতি হল মর্মান্তিক। শ্রমিকদের মারধরে মৃত্যু হল সুপারভাইজারের। বিশ্বকর্মা পুজোয় শ্রমিকদের খাওয়াবেন, হোটেলে মাংসের অর্ডার দিয়েছিলেন। সেই শ্রমিকদের মারেই মরতে হল সুপারভাইজারকে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সন্ধেয় সাহাগঞ্জের জুপিটার কারকাখানার গেটের সামনে জিটি রোডে। মৃত সুপারভাইজার পাপ্পু দাস। তিনি উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার বাসিন্দা। রেলের যন্ত্রাংশ তৈরির জুপিটার কারখানার সুপারভাইজার ছিলেন পাপ্পু। প্রতিদিনের মত এদিনও সকালে কাজে আসেন তিনি। শ্রমিকরা জানায় বিশ্বকর্মা পুজোর প্রস্তুতি চলছিল কারখানার ভিতরে। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ কারখানার গেটের বাইরে কিছু লোক সুপারভাইজারকে ধরে মারধর শুরু করে। রাস্তায় ফেলে লাথি কিল ঘুষি মারা হয় সুপারভাইজারকে। কারখানার কয়েকজন শ্রমিক পাপ্পুকে ওই অবস্থায় দেখে তাঁকে বাঁচাতে যান। বাঁচানোর চেষ্টা করায় চন্দন দেব নামে এক শ্রমিককেও বেধড়ক মারা হয়। মারধর করে আততায়ীরা পালিয়ে যায়। শ্রমিকরাই আহত সুপারভাইজারকে তুলে ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে যায় চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকেরা। শ্রমিকরাও জড়ো হয় কারখানায়। গেটের বিপরীত দিকে পুতুল দেবী পাশোয়ানের হোটেল। ঘটনার সময় তার বাবা নন্দলাল মাঝি ছিলেন দোকানে। এদিন ঘটনা প্রসঙ্গে পুতুল দেবী জানিয়েছেন, তিনি সে সময় দোকানে ছিলেন না। তার বাবা একাই ছিলেন। পাশের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন সুপারভাইজার। কয়েকজন শ্রমিককে টাকা দেন। আরও টাকা দিতে হবে দাবি করে শ্রমিকরা। তা নিয়ে তর্ক শুরু হয়। দোকান থেকে বেরিয়ে পাশের একটি বিরিয়ানির দোকান ছেড়ে সেন টি স্টলের সামনে যেতেই শ্রমিকরা তাকে ঘিরে ধরে। ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা যায় কারখানা গেট থেকে উত্তেজিত কয়েকজন বেরিয়ে আসে। চড়াও হয় সুপারভাইজারের উপর। কিল চড় ঘুষি চলতে থাকে। দোকানের সামনে ফেলে মারা হয়। সিসিটিভি ফুটেজেই দেখা যায় ঘটনা দেখে অনেকেই দাঁড়িয়ে পড়েন। অনেকে দেখেও ছাড়াতে যাননি। পরে কয়েকজন শ্রমিক বেরিয়ে এসে ছাড়াতে গিয়ে আক্রান্ত হন। পুতুল দেবী জানান, বিশ্বকর্মা পুজোয় শ্রমিকদের খাওয়াবেন বলে ২০ কিলো মাংসের অর্ডার দিয়েছিলেন সুপারভাইজার।
যারা তাঁকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল সেই সব শ্রমিকরাও জানান সুপারভাইজার বাবু ভাল লোক ছিলেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে চুঁচুড়া থানার পুলিশ।
ছবি: পার্থ রাহা
Advertisement
এই বিভাগের আরও খবর
Advertisement