Kaushik Roy | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮ : ৫৪Kaushik Roy
সুপ্রীতি চট্টোপাধ্যায়
ব্যারাকপুর মহকুমার অন্তর্গত কাঁকিনাড়ার মাদরালের মুখার্জি বাড়ির দুর্গাপুজো আজও ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। বাড়ির সদস্যরা জানাচ্ছেন, প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো জমিদার বাড়ির এই পুজোতে মা দুর্গা পূজিত হন সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ মতে। কথিত আছে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রায় ৩০০ বছর আগে আসামের রাজা ও মাদরালের মুখার্জি বাড়ির কোনও এক সদস্যকে নিম কাঠের তৈরি রামসীতার ধ্যানস্থ মূর্তি উপহার দিয়েছলেন। সেই থেকেই মাদরালের মুখার্জি বাড়ির এই রামসীতা কুলদেবতা রূপে পূজিত হয়ে আসছেন। প্রতিপদ থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত মা চণ্ডীর সঙ্গে পূজিত হন রামসীতা। আর ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত মা দুর্গার সঙ্গে পূজিত হন রামসীতা।
মহালয়ার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদের দিন সকাল থেকেই মুখার্জি বাড়ির ঠাকুর দালানে শুরু হয় চণ্ডীপাঠ। কুল পুরোহিত মা চণ্ডীর ঘট বসিয়ে পুজো শুরু করেন। প্রতিপদ থেকে পঞ্চমী পর্যন্ত মা চন্ডী, রামসীতা ও লক্ষ্মীদেবীর ভোগ রান্না হয়। ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত এই তিনজনের সঙ্গে মা দুর্গাকেও ভোগ দেওয়া হয়। প্রতিপদের দিন থেকে মা চণ্ডী, রামসীতা, লক্ষ্মী দেবী একসাথে পূজিত হন। ষষ্ঠীতে নিয়ম মেনে মা দুর্গার বোধন হয়। এই বাড়ির দুর্গা প্রতিমার একটা নির্দিষ্ট মাপ রয়েছে যা বংশ পরম্পরায় মৃৎশিল্পীরাও বজায় রেখে চলেছেন। দুর্গার মাপ ৯ পোয়া। আর পুরো চালার মাপ চওড়ায় সাড়ে ৬ ফুট আর লম্বায়ও সাড়ে ৬ ফুট।
ষষ্ঠীতে দেবী মায়ের বোধনের পর সপ্তমীর দিন সকালে বাড়িতেই কলাবউ স্নান করানো হয়। ১৩ নদী সাত সমুদ্রের জল দিয়ে কলা বউকে স্নান করান বাড়ির কনিষ্ঠ সদস্যরা। মুখার্জি বাড়ির বিসর্জনের পর্বটাও একটু অন্যরকম। তাদের প্রতিমা নিরঞ্জন হয় বহু প্রাচীন মাদরালের একটি দীঘিতে। মুখার্জি বাড়ির এই ঐতিহাসিক পুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অগুনতি মানুষ আসেন। মুখার্জি বাড়ির আত্মীয়স্বজনরাও যে যেখানেই থাকেন না কেন পুজোর ক'টা দিন একসাথে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করে কাটান। খাওয়া দাওয়া, ছোট ছোট অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই শেষ হয় মুখার্জি বাড়ির দুর্গাপুজো।
Advertisement
এই বিভাগের আরও খবর
Advertisement