দেবস্মিতা | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭ : ০৪Debosmita Mondal
আজকাল ওয়েবডেস্ক: যে দেশের নামেই আছে বাংলা সেই দেশে কমছে বাংলার প্রভাব। মোহাম্মদ আলি জিন্নাহর মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে উর্দু কবিতা ও গানের মধ্য দিয়ে। এই তথ্য সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান যা আজকের বাংলাদেশ, পাকিস্তান কর্তৃক উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন করেছিল। প্রাণ গিয়েছিল ৫ জনের। আদায় করে নিয়েছিল বাংলা ভাষার ভিত্তিতে গঠিত দেশ বাংলাদেশ। কিন্তু হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে মোহাম্মদ আলি জিন্নাহর মৃত্যুবার্ষিকী উর্দু কবিতা ও গানের মাধ্যমে পালিত হচ্ছে যা যথেষ্ট উদ্বেগের বলেই মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম ঢাকায় জিন্নাহর মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করা হল। এবার ছিল তাঁর ৭৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী। তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমি কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তারা পাকিস্তান সৃষ্টিতে জিন্নাহর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দিয়ে বলেন, "বাংলাদেশেরও অস্তিত্বে তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।" এই কথা প্রকাশ্যে আসার পরই ভুরু কুঁচকেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের অভিমত, বিষয়টি ইতিহাসের পুনর্লিখনের দিকেই যাচ্ছে।
এছাড়াও ঢাকা প্রেস ক্লাবে জিন্নাকে স্মরণ করা হয়। ঢাকা ট্রিবিউন জানিয়েছে, সেখানে উর্দু কবিতা, আবৃত্তি এবং বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে দিনটি।
পাকিস্তান-সমর্থিত বিএনপি ও জামাতের দ্বারা হাইজ্যাক হয়ে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সামরিক নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের এক মাস পর এই অনুষ্ঠান পালিত হয়। প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার আমলে উগ্র ইসলামপন্থী এবং পাকিস্তানি মৌলবাদীদের কঠোর হাতে দমন করা হয়।
১৯৫২ সালের পূর্ব পাকিস্তানে সরকার, শিক্ষা, মিডিয়া, মুদ্রা, ডাকটিকিটে বাংলাকে একটি সহ-সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রতিবাদ দেখা যায়। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানি দুঃসাহসিকতা দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের অন্ধকারতম অধ্যায় হয়ে ওঠে। ফের অন্ধকারেই যাচ্ছে তবে বাংলাদেশ উঠছে প্রশ্ন।
যে জাতি তার সৃষ্টি থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য লড়াই করেছিল সেখানে জিন্নাহকে উদযাপন করার বিড়ম্বনা যতটা বিভ্রান্তিকর, ততটাই আকর্ষণীয়ও বটে। ঢাকার এক সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী বলেন, "এটা ছিল আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর চপেটাঘাত, যেখানে ৩০ লাখ বাঙালি তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিল। আমি বাকরুদ্ধ!"
বাংলাদেশ কি তবে নতুন করে ইতিহাস লিখছে?
Advertisement
এই বিভাগের আরও খবর
Advertisement